স্তন ক্যান্সার নিয়ে আপনি সচেতন তো?

প্রকাশঃ অক্টোবর ১০, ২০১৬ সময়ঃ ১১:৫৯ পূর্বাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১২:১৭ অপরাহ্ণ

14610572_1809207836028150_602008444_n 

স্তন ক্যান্সার একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা। পুরুষ এবং মহিলা উভয়েরই এ রোগ হতে পারে, তবে মহিলাদের মধ্যেই এর প্রবণতা বেশি দেখা যায়। এ রোগের প্রথমে চিহ্নিত করতে পারলে সমাধান সম্ভব। তবে দেরি হয়ে গেলে মৃত্যুর সম্ভাবনা থেকে যায়।

স্তন ক্যান্সার কী, লক্ষণ, উপসর্গ ও চিকিৎসা:

স্তন ক্যান্সার কী:

স্তনের কিছু কোষ যখন অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠে তখন স্তন ক্যান্সার হতে দেখা যায়। অধিকাংশ মহিলাদের জন্য এই রোগ একটি আতঙ্কের কারণ।

স্তন ক্যান্সার হয়েছে কী করে বুঝবেন?

স্তন ক্যান্সার হলে সাধারণত নিচের লক্ষণ ও উপসর্গগুলো দেখা দেয় :

১. স্তনে একটি পিন্ডের মত অনুভব হয়

২. স্তনের বোঁটা থেকে রক্ত বের হয়

৩. স্তনের আকার ও আকৃতির পরিবর্তন হয়

৪. স্তনের ত্বকে পরিবর্তন দেখা দেয়, যেমন-টোল পড়া

৫. স্তনের বোঁটা ভিতরের দিকে ঢুকে যায়

৬. স্তনের বোঁটার চামড়া উঠতে থাকে

৭. স্তনের ত্বক লালচে যেমন-কমলার খোসার মতো এবং গর্ত গর্ত হয়ে যায়

কখন ডাক্তার দেখাবেন:

নিচের কারণগুলো দেখা দেয়ার সাথে সাথে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে :

১. স্তনে নতুন এবং অস্বাভাবিক পিন্ড অনুভব করলে

২. পরবর্তী মাসিক পার হয়ে গেলেও পিন্ড না গেলে

৩. স্তনের পিন্ড আরও বড় এবং শক্ত হলে

৪. স্তনের বোঁটা থেকে অনবরত রক্ত নির্গত হলে

৫. স্তনের ত্বকে পরিবর্তন দেখা দিলে

৬. স্তনের বোঁটা ভিতরের দিকে ঢুকে গেলে

কোথায় চিকিৎসা করাবেন?

১. জেলা সদর হাসপাতাল

২. মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

৩. বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়

৪. বিশেষায়িত সরকারী/বেসরকারী হাসপাতাল

কী ধরণের পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন হতে পারে?

১. মেমোগ্রাম (Mammogram) বা স্তনের এক্স-রে

২. ব্রেস্ট আলট্রাসাউন্ড (Breast ultrasound)

৩. ব্রেস্ট ম্যাগনেটিক রিজোন্যান্স ইমাজিং (Breast magnetic resonance imaging, (MRI))

৪. বায়োপসি (Biopsy)

৫. রক্তের পরীক্ষা

৬. বুকের এক্স-রে

৭. কম্পিউটারাইজড টমোগ্রাফী স্ক্যান (Computerized tomography (CT) scan)

৮. পজিট্রন ইমিশন টমোগ্রাফী স্ক্যান (Positron emission tomography (PET) scan)

কী ধরণের চিকিৎসা আছে?

স্তন ক্যান্সারের চিকিৎসা নির্ভর করে স্তন ক্যান্সারের ধরণ, পর্যায় ক্যান্সারের কোষগুলো হরমোন সংবেদনশীল কিনা তার উপর। অধিকাংশ মহিলারাই স্তন অপারেশনের পাশাপাশি অন্যান্য বাড়তি চিকিৎসাও গ্রহণ করে থাকেন। যেমন: কেমোথেরাপি, হরমোন 14614458_1809207822694818_1332389311_oথেরাপি অথবা রশ্মি থেরাপি ।

যাদের স্তন ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি রয়েছে তারা হলেন :

১. পুরুষদের চেয়ে মহিলাদের স্তন ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বেশি

২. ৬০ বছর বয়সের বেশি মহিলাদের

৩. একটি স্তনে ক্যান্সার হলে অপরটিও আক্রান্ত হতে পারে

৪. মা, বোন অথবা মেয়ের স্তন ক্যান্সার থাকলে

৫. জীনগত (Genes) কারণে

৬. রশ্মির বিচ্ছুরণ থেকে (Radiation Exposure)

৭. অস্বাভাবিক মোটা হলে

৮. অল্প বয়সে মাসিক হলে

৯. বেশি বয়সে মনোপজ হলে (Menopause)

১০. বেশি বয়সে প্রথম বাচ্চা নিলে

১১. যে মহিলারা হরমোন থেরাপী নিয়ে থাকেন

১২. মদ পান করলে

স্তন ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য সাধারণত যে অপারেশনগুলোর করার প্রয়োজন হয়:

১. ল্যাম্পপেকটমি (Lumpectomy)

২. ম্যাসটেকটমি (Mastectomy)

৩. সেন্টিনাল নোড বায়োপসি (Sentinel node biopsy)

৪. অক্সিলারি লিম্ফ নোড ডিসেকশন (Axillary lymph node dissection)

প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই সর্বোত্তম পন্থা। তাই প্রথম থেকে সচেতন থাকাটা অনেক বেশি জরুরী। মনে রাখবেন, প্রথমদিকের অস্বস্থেই যেন জীবন নাশের কারণ না হয়ে যায়!

প্রতিক্ষণ/এডি/তাজিন

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G